যশোর, ২১ জুন:* যশোরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার আবারও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। গত তিন দিনে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে মৃত্যু হয়েছে তিনজন করোনা রোগীর। সর্বশেষ শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে মৃত্যু হয় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গদখালী গ্রামের বাসিন্দা সাবিলা বেগমের (৫৫)। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সাবিলা বেগম যশোর শহরের বেজপাড়ায় ছেলের ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। ঠান্ডা, জ্বর ও কাশি নিয়ে গত ৫ জুন তিনি ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলে ১২ জুন তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়, যেখানে ২০ জুন বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
আইসিইউ ইনচার্জ ডা. রবিউল ইসলাম তুহিন জানিয়েছেন, সাবিলা বেগম আগে থেকেই শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনা সংক্রমণের ফলে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়।
এর আগে, বুধবার ভোরে বাঘারপাড়ার জহুরপুর গ্রামের আমির হোসেন (৬৮) এবং একই দিন রাতে মণিরামপুরের মাহমুদকাঠি গ্রামের ইউসুফ আলী (৪৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মাত্র তিন দিনে একই হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজনে, যা জনমনে নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষার জন্য ৫ হাজার কিট চাওয়া হলেও পাওয়া গেছে মাত্র ২ হাজার কিট। বৃহস্পতিবার এসব কিট হাসপাতালে পৌঁছেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, এই কিটগুলো শুধুমাত্র ভর্তি থাকা সন্দেহভাজন রোগীদের র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হবে। বাইরের রোগীদের আপাতত পরীক্ষা সম্ভব নয়।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা জানান, জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো এখনো কিট পায়নি, তবে চলতি সপ্তাহে কিট পৌঁছাবে বলে আশা করছেন তিনি। দীর্ঘদিন কিটের অভাবে সরকারি পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটছিল। নতুন পাওয়া কিট দিয়ে শনিবার (২২ জুন) থেকে রোগীদের পরীক্ষা শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে, তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এখন সবচেয়ে জরুরি।