ব্রিটিশ শাসনকালে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে যান ইংরেজরা। প্রায় দু’শ বছরের পরাধীনতায় ভারত ঠিক কত পরিমাণ স্বর্ণ খুইয়েছে, স্পষ্টভাবে এর কোন হিসাব নেই। তবে সেই ইংরেজদের দেশ থেকে এবার টনে টনে স্বর্ণ ফিরিয়ে আনার খবর সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ইংরেজদের নিয়ে যাওয়া স্বর্ণই ভারত ফিরিয়ে এনেছে। এর উত্তর হচ্ছে, না। যুক্তরাজ্য জমা রাখা নিজেদের স্বর্ণই ফিরিয়ে আনছে ভারত। ডলার পাওয়ার বিনিময়ে এসব স্বর্ণ বন্ধক রাখা হয়েছিল যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড’। এখন এসব স্বর্ণ স্থান পাবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ভল্টে। ইতোমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন স্বর্ণ যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ব্রিটেনের ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডে বন্ধক হিসাবে জমা রাখা ১০০ টন সোনা নিজেদের ভল্টে ফিরিয়ে আনল কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, ১৯৯১ সাল থেকে ধাপে ধাপে বিদেশে জমা রাখা যে সোনা ভারত ফিরিয়ে এনেছে, তার মধ্যে একলপ্তে এতটা বেশি তেমন দেখা যায়নি। বিদেশি মুদ্রার সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে বন্ধক হিসাবে বিদেশের ব্যাঙ্কে তা জমা রেখেছিল দেশ। বিদেশে জমা রাখা সোনা ঘরে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবেই এই পদক্ষেপ।
গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) কেন্দ্রের সোনার মজুত বেড়েছে ২৭.৪৬ টন। ওই ১০০ টন সোনা দেশে ফিরিয়ে আনার পরে ওই ভান্ডার হল ৮২২ টন। এর একটা বড় অংশই বিদেশের ব্যাঙ্কে জামা রাখা আছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিদেশে মজুত করা আছে ৪১৩.৭৯ টন।
সরকার যে নোট ছাপায় তার প্রেক্ষিতে সোনা মজুত রাখা হয়। ওই খাতে দেশে সরকারের ভান্ডারে সোনা রয়েছে ৩০৮ টন। এ ছাড়া ব্যাঙ্কগুলির সম্পদ হিসাবে মজুত রয়েছে ১০০.২৮ টন। কেন্দ্র ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের কাছ থেকে ২০০ টন কিনেছিল। তার পর থেকে খোলা বাজার থেকেই তারা সোনা কিনেছে। বিদেশি মুদ্রা সোনায় রূপান্তরিত করে রাখার অঙ্গ হিসাবেই ওই পদক্ষেপ কেন্দ্রের। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ব্যবস্থায় সোনা মজুত রাখা আছে মুম্বই এবং নাগপুরে।
সূত্র: আনন্দবাজার